ফ্রিল্যান্সারদের একটি কমন প্রশ্ন চেয়ে ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো? যেহেতু ল্যাপটপ সহজেই এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া যায় সুতরাং ফ্রিল্যান্সাররা সবাই ল্যাপটপের দিকে ঝুকে যাচ্ছে। এখন নতুন ফ্রিল্যান্সারদের কমন প্রশ্ন ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো

এই ডিজিটাল যুগের সাথে তাল মিলিয়ে প্রতিনিয়ত বাড়ছে ফ্রিল্যান্সিং কাজের সংখ্যা এবং ফ্রিল্যান্সারদের সংখ্যা। ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য সবথেকে জনপ্রিয় এবং বহুল ব্যবহৃত হচ্ছে ল্যাপটপ।
ফ্রিল্যান্সিং কাজের সুবিধার জন্য সব ফ্রিল্যান্সাররা একটি ভালো মানের ল্যাপটপ ক্রয় করতে চাই। এবং তারা জানতে চাই ফ্রিল্যান্সিং কাজের জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো? এবং কত বাজেট ল্যাপটপ কিনলে ভালো ভাবে কাজ করা যাবে?
ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো ? এই প্রশ্ন যদি আপনার মনে থেকে থাকে, তাহলে আমি এই প্রশ্নটির উত্তর বাজেট এবং আপনার কাজের ক্যাটাগরির উপর ভিত্তি করে দেওয়ার চেষ্টা করব।
আমি একজন প্রফেশনাল ফ্রিল্যান্সার। আমি গত 4 বছর থেকে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কাজ করে আসছি। গুগলে আমাকে websoriful নামে পাবেন। তো চলুন কথা না বলে ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।
ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো ?

কথায় আছে, জিনিস যেটা ভালো! দামটা একটু বেশি হয়। কিন্তু নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য বেশি দামের ল্যাপটপ ক্রয় করা অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। এবং অনেক নতুন ফ্রিল্যান্সার আছে যারা সাধারন নরমাল ফ্রিল্যান্সিং কাজ করে। তাই তাদের অনেক বেশি দামের ল্যাপটপ ক্রয় করা উচিত হবে না।
এ আর্টিকেলে আমি কোন কোম্পানির ল্যাপটপকে প্রমোশন করতেছিনা। আমি আমার ফ্রিল্যান্সিং অভিজ্ঞতার আলোকে আপনাদের বুঝানোর চেষ্টা করতেছি।
দামি ল্যাপটপ সব সময় ভালই হয়। আমি আপনাদের কাজের উপর ভিত্তি করে একটি বাজেট তৈরি করব অর্থাৎ আপনার কোন বাজেটের ল্যাপটপ ক্রয় করা উচিত। তা এই আর্টিকেলটি সম্পন্ন পড়ে বুঝতে পারবেন।
বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং কাজের অনেক অনেক সেক্টর রয়েছে। তবে বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সাররা বেশি যে সেক্টর গুলোতে কাজ করে থাকে, সে সেক্টরগুলোর উপর ভিত্তি করে আমি ল্যাপটপ ক্রয় করার বাজেট নির্ধারণ করে দেবো।
ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো? বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের কাজের উপর ভিত্তি করে আমি চারটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করেছি। যথা:-
- Digital Marketing & SEO
- Web-design & Development
- Graphics Design
- Video Editing
নিচে চার ক্যাটাগরির উপর ভিত্তি করে আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো ক্রয় করার সাজেশন ডিটেলস আলোচনা করা হলো
ডিজিটাল মার্কেটিং কাজের জন্য ল্যাপটপ:
ডিজিটাল মার্কেটিং এবং এসইও রিলেটেড কাজের জন্য যেকোনো ধরনের ল্যাপটপ হলেই হয়। ডিজিটাল মার্কেটিং এবং এসইও কাজের জন্য খুব বেশি দামি ল্যাপটপ ক্রয় করতে হবে না। একটি নরমাল ল্যাপটপের সাহায্যে আপনি এই কাজগুলো করতে পারবেন।
কারণ ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজগুলোতে অনেক বেশি সফটওয়্যার বা অনেক ভারী সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হয় না। এ কাজগুলো জন্য সফটওয়্যার ব্যবহার করা করার বেশি প্রয়োজন হয় না। ডিজিটাল মার্কেটিং কাজগুলোতে অনেক বেশি ব্রাউজিং করতে হয়।
সুতরাং আপনি অল্প বাজেটের এবং একটি কম দামি ল্যাপটপ এর সাহায্যে ওই কাজগুলো খুব সহজেই করতে পারবেন।
ওয়েব ডিজাইন ডেভেলপমেন্ট এর জন্য ল্যাপটপ:
আপনি যদি একজন ওয়েব ডিজাইনার হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার কয়েকটি কোড এডিটর ব্যবহার করতে হবে। এবং এই কোড এডিটর সফটওয়্যার গুলো খুবই নরমাল সফটওয়্যার। এছাড়া আপনার অন্য কোনো ভারী সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হবে না।
আপনি যদি একজন ওয়েব ডেভেলপার হয়ে থাকেন, তাহলেও এই কোড এডিটর গুলোই আপনাকে ব্যবহার করতে হবে। সুতরাং আপনি যদি একটি নরমাল ল্যাপটপ থাকে, তাহলে আপনি এই কাজগুলো খুব সহজেই করতে পারবেন। এ কাজগুলো করার জন্য আপনাকে অনেক দামি ল্যাপটপ ক্রয় করতে হবে না।
গ্রাফিক ডিজাইন ডেভেলপমেন্ট এর জন্য ল্যাপটপ:
আপনি যদি গ্রাফিক ডিজাইন কাজ করেন অর্থাৎ ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে গ্রাফিক ডিজাইন নিয়ে কাজ করেন, তাহলে আপনাকে ভালো মানের একটি ল্যাপটপ ক্রয় করতে হবে। কারণ গ্রাফিক ডিজাইন কাজ করার জন্য Adobe হাই কোয়ালিটি সফটওয়্যার গুলো ব্যবহার করতে হবে।
adobe সফটওয়্যার গুলো দিয়ে গ্রাফিক ডিজাইন করার সময় কমদামে ল্যাপটপ ব্যবহার করলে আপনার ল্যাপটপটি স্লো হয়ে যাবে অথবা হ্যাং মারবে। সুতরাং আপনি যদি গ্রাফিক ডিজাইন নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কাজ করেন এবং আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো এ প্রশ্ন করেন, তাহলে আমি আপনাকে বলব 60 হাজার টাকা বা তার বেশি টাকা দামী ল্যাপটপ ক্রয় করুন।
কারণ কম দামি ল্যাপটপ এর সাহায্যে আপনি কখনই ভালোভাবে গ্রাফিক ডিজাইন এর কাজ গুলো করতে পারবেন না।
ভিডিও এডিটিং এর জন্য ল্যাপটপ:

আপনি যদি ভিডিও এডিটিং নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কাজ করে থাকেন, তাহলে আপনাকে অবশ্যই অনেক হাই কোয়ালিটি দামি ল্যাপটপ ক্রয় করতে হবে। কম দামি ল্যাপটপ দিয়ে আপনি কখনোই ভালোভাবে ভিডিও এডিটিং কাজ করতে পারবে না।
যারা ভিডিও এডিটিং কাজ করে তারা সাধারণত ভালো মানের ডেক্সটপ ব্যবহার করে থাকে। কারণ ভিডিও এডিটিং কাজ করার জন্য আপনাকে এনিমেশনের কাজ করতে হবে। এছাড়াও আপনাকে অনেক বেশি ভালো ভালো সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হবে।
ভিডিও এডিটিং কাজ করার সময় ভিডিও এডিটিং কাজ শেষ করার পরে আপনার ভিডিওটি কম্পিউটারে সেভ করার জন্য রেন্ডারিং দেওয়া হয়। আপনার যদি কম দামি ল্যাপটপ ব্যবহার করে এই রেন্ডারিং দিয়ে থাকেন, তাহলে একটি ভিডিও রেন্ডারিং করতে অনেক অনেক অনেক বেশি সময় লাগবে।
সুতরাং আপনি যদি ভিডিও এডিটিং কাজ করে থাকেন তাহলে আপনি একটি ভাল মানের ল্যাপটপ ক্রয় করুন যেটা লাখ টাকার উপরে হবে। এবং আপনি যদি লেপটপ ক্রয় করতে চান, তাহলে অবশ্যই লাখ টাকার উপরে ল্যাপটপ ক্রয় করুন।
ভালো ল্যাপটপ ক্রয় করার জন্য বাজেট:
একটি ভাল মানের ল্যাপটপ ক্রয় করার জন্য বাজেট খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কম দামে অবশ্যই আপনি ভাল মানের ল্যাপটপ ক্রয় করতে পারবেন না। আপনার যদি বাজেট বেশি থাকে আপনি যে কোন কোম্পানির ল্যাপটপ ক্রয় করতে পারেন।
আমি উপরে অলরেডি বলে দিয়েছি, আপনি যদি হালকা সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয় এরকম ফ্রিল্যান্সিং কাজ করে থাকেন। যেমন ডিজিটাল মার্কেটিং, এসইও, ওয়েব ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি। তাহলে আপনার কম দামি ল্যাপটপ দিয়ে খুব ভালোভাবে কাজ করতে পারবেন।
আর যদি আপনি গ্রাফিক ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং এর মত হাই কোয়ালিটি কাজগুলো করতে চান, তাহলে অবশ্যই আপনাকে ভাল মানের এবং দামি ল্যাপটপ ক্রয় করা উচিত। কারণ কম দামি ল্যাপটপ দিয়ে এই কাজগুলো আপনি স্বাচ্ছন্দে করতে পারবেন না।
আমি আর্টিকেলে ল্যাপটপের কোন ব্র্যান্ড নিয়ে আলোচনা করবো না। আমি মনে করি আপনার বাজেট যদি বেশি হয়, তাহলে যে কোনো ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ আপনি ভালো মানের ল্যাপটপ পেয়ে যাবেন। সুতরাং তাই আমি ল্যাপটপের ব্র্যান্ড নিয়ে আলোচনা করিনি।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে আমিতো হাই কোয়ালিটি কাজ গুলো যেমন ভিডিও এডিটিংl গ্রাফিক ডিজাইন করব তাহলে আপনি তাহলে আমি কি করবো ল্যাপটপ নাকি ডেক্সটপ। আপনার মনে যদি এরকম কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে অবশ্যই অবশ্যই নিচের লিঙ্ক করা আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন:
উপসংহার:
ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো এ আর্টিকেলে আমি আমার ফ্রিল্যান্সিং অভিজ্ঞতার আলোকে আপনাদের একটি ভালো পরামর্শ দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আপনি যদি ভিডিও এডিটিং গ্রাফিক ডিজাইনের মত ফ্রিল্যান্সিং কাজ করে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার দামে ল্যাপটপ ক্রয় করা উচিত।
এই আর্টিকেলটি অভিজ্ঞতার আলোকে লিখেছি। আমি আবারও বলে দিচ্ছি গ্রাফিক ডিজাইন এবং ভিডিও এডিটিং কাজ করার জন্য অনেক দামি ল্যাপটপ ক্রয় করা উচিত। এসইও, ডিজিটাল মার্কেটিং ,ওয়েব ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কাজের জন্য কম দামি ল্যাপটপ হলেও চলবে।
ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাদের সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো ইত্যাদি সম্পর্কিত আপনাদের যদি কোনো প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আমি সবগুলো কমেন্টের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।
ফ্রিল্যান্সিং টিপস, অনলাইন ইনকাম, মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং, ব্লগিং এবং টেকনোলজি সম্পর্কে রেগুলার আপডেট এবং রেগুলার আর্টিকেল পেতে websoriful সাইট এর সাথেই থাকুন। ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো আর্টিকেলটি পড়ার জন্য সবাইকে আবারও অসংখ্য ধন্যবাদ।