বিট কয়েন বা ক্রিপ্টোকারেন্সি কি ? বিটকয়েন একাউন্ট ও বিটকয়েন বিনিয়োগ

আজ আমরা আলোচনা করব বিট কয়েন বা ক্রিপ্টোকারেন্সি সম্পর্কে। আপনারা যদি বিট কয়েন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান, তাহলে এই আর্টিকেলটি সবাই মনোযোগ সহকারে পড়তে পারেন। কারণ এখানে আমি আলোচনা করব বিটকয়েন কি এবং কেন ? বিটকয়েন দিয়ে কি করা হয়? বিটকয়েন একাউন্ট এবং বিনিয়োগ ইত্যাদি সম্পর্কে। 

বিট কয়েন
বিট কয়েন

আমি শরিফুল ইসলাম, প্রফেশনাল ফ্রিল্যান্সার। আমি গত তিন বছর ধরে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কাজ করি। এছাড়াও আমি একজন আইটি বিশেষজ্ঞ। ক্রিপ্টোকারেন্সি বা বিটকয়েন সম্পর্কে আমার যথেষ্ট অভিজ্ঞতা আছে। গুগলে আমাকে websoriful নামে পাবেন।

চলুন কথা না বলে বিট কয়েন কি এবং কেন ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক

বিশেষ দ্রষ্টব্য:  বিটকয়েন ক্রয় বিক্রয় করে ক্ষতি হলে এর জন্য আমি দায়ী নই। কারণ আমি  আপনার ফাইন্যান্স উপদেষ্টা নয়। বিটকয়েন যেহেতু বাংলাদেশে অবৈধ সুতরাং বিটকয়েন ক্রয় বিক্রয় করে আপনি যদি কোন অপরাধ করেন এর জন্য আমি দায়ী নই।

বিট কয়েন
বিট কয়েন

বিট কয়েন কি ?

বিট কয়েন আসলে একটি ভার্চুয়াল মুদ্রা। যা কম্পিউটারের মাধ্যমে আদানপ্রদান করা হয়। বিটকয়েনের সাংকেতিক প্রতীক হল BTC. এবং বিটকয়েনের ক্ষুদ্রতম একক হল সাতোশি। 

বিটকয়েন আসলে একটি ডিজিটাল মুদ্রা। বাস্তবে এর কোন অস্তিত্ব নেই। এটি ডিজিটাল মাধ্যমে আদান-প্রদান করা হয়। বিটকয়েনের মত এরকম হাজার হাজার ডিজিটাল মুদ্রা রয়েছে। এগুলোকে ক্রিপ্টোকারেন্সি বলা হয়।

ক্রিপ্টোকারেন্সি কি ?

ক্রিপ্টোকারেন্সি হল এক রকমের ডিজিটাল কারেন্সি। এটি কোন সরকার বা রাষ্ট্র উৎপাদন বা জোগান দেয় না। ক্রিপ্টোকারেন্সি কে গুপ্তমুদ্রাও বলা হয়। ক্রিপ্টোকারেন্সি তৈরি করতে বিভিন্ন হার্ডওয়্যারের মাধ্যমে ইন্টারনেট এ যুক্ত থেকে মাইনিং করতে হয়। 

এই মাইনিং প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন জটিল সব এলগোরিদম, ব্লক এবং ক্রিপ্টোগ্রাফি সম্পন্ন করেই একেকটি কয়েন বা ক্রিপ্টোকারেন্সি বানাতে হয়।  জনপ্রিয় কিছু ক্রিপ্টোকারেন্সি হল: Bitcoin(BTC),  Ethereum(ETH), Tether(USDT), BNB ইত্যাদি। 

বিটকয়েন কোন কোন দেশে বৈধ

যেহেতু বিটকয়েন কোন সরকারি মুদ্রা নয় এবং এটি কোন সরকার বা গভারমেন্ট পরিচালনা করে না সুতরাং এটি অনেকগুলো দেশে বৈধ এবং অনেকগুলো দেশে একটি ব্যবহার করা অবৈধ।

বর্তমানে পৃথিবীর কয়েকটি দেশে বিট কয়েন সম্পূর্ণ বৈধ যেমন:

  • ডেনমার্ক
  • ফ্রান্স
  • জার্মানি
  • আইসল্যান্ড
  • জাপান
  • মেক্সিকো
  • স্পেন
  • যুক্তরাজ্য ইত্যাদি

 এছাড়াও আরও অনেক দেশ আছে যেখানে বিটকয়েন বৈধ এবং সেখানে বিটকয়েন লেনদেন করা হয়।

এছাড়াও বাংলাদেশসহ অনেকগুলো দেশে বিটকয়েন লেনদেন সম্পূর্ণ অবৈধ। এবং বিটকয়েন সহ অনলাইন ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহার করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। বাংলাদেশ বিটকয়েন এখন পর্যন্ত সরকার বৈধ ঘোষণা করে নেই এবং এটি আমরা সহজে ব্যবহার করতে পারি না।

তবে বাংলাদেশ থেকেও বিটকয়েন লেনদেন করা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশের লাখ লাখ তরুণ-তরুণী ক্রিপ্টোকারেন্সি বা বিটকয়েন এর মাধ্যমে অনলাইন থেকে অনেক পরিমান ইনকাম করে থাকে।

বিটকয়েন বিনিয়োগ

বাংলাদেশ এরকম অনেক লাখ লাখ লোক আছে যারা বিটকয়েনে বিনিয়োগ করে অনেক বেশি পরিমাণ অর্থ উপার্জন করেছে। এরকম অনেক মানুষ আছে যারা বিটকয়েন ইনভেস্ট করে লস খেয়েছে। বিট কয়েন বা বিভিন্ন ক্রিপ্টোকারেন্সি যেহেতু শেয়ার মার্কেট এর মতই প্রাইস উঠানামা করে। সুতরাং এখানে ইনভেস্ট করে লাভবান হওয়ার অনেক বড় সম্ভাবনা রয়েছে।

আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে ক্রিপ্টোকারেন্সিতে ইনভেস্ট করে ইনকাম করতে চান, তাহলে অবশ্যই আপনাকে ক্রিপ্টোকারেন্সি স্পট এক্সচেঞ্জ এর সাইটে একাউন্ট করতে হবে। বর্তমানে পৃথিবীর মধ্যে সবথেকে জনপ্রিয় এবং বহুল ব্যবহৃত ক্রিপ্টোকারেন্সি স্পট এক্সচেঞ্জ এর নাম হলো Binance.

এছাড়াও আমি পৃথিবীতে সবথেকে বেশি ব্যবহৃত পাঁচটি ক্রিপ্টোকারেন্সি নেটওয়ার্কের নাম নিচে উল্লেখ্য করলাম:

  1. Binance
  2. Coinbase Exchange
  3. FTX
  4. Kraken
  5. KuCoin

আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে ক্রিপ্টোকারেন্সি তে ইনভেস্ট করতে চান, তাহলে উপরের পাঁচটি কোম্পানীর মাধ্যমে ক্রিপ্টোকারেন্সি ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবেন খুব সহজেই। 

বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে Binance. আপনিও চাইলে Binance ব্যবহার করতে পারেন। বাইনান সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানতে আপনি ইউটিউবে সার্চ দিতে পারেন। ইউটিউবে বাইনান্স সর্ম্পককে অনেক বাংলা ভিডিও পাবেন।

Trust wallet কি?

Trust wallet হচ্ছে binance প্ল্যাটফর্ম এর অফিসিয়াল ক্রিপ্টো ওয়ালেট। এখানে আপনি ক্রিপ্টো কারেন্সি আদান প্রদান এবং দীর্ঘ মেয়াদের জন্য ক্রিপ্টোকারেন্সি স্টোর বা জমা করে রাখতে পারবেন।

Trust wallet হচ্ছে আপনার ব্যক্তিগত ওয়ালেট। এখানে আপনি কত ক্রিপ্টোকারেন্সি জমা করেছেন বা আপনার একাউন্ট ইনফর্মেশন আপনি ছাড়া আর কেউ জানতে পারবে না।

ট্রাস্ট ওয়ালেট এতটাই সিকিউর যে, binance কোম্পানি এটা তৈরি করেছে। সেই binance কোম্পানিও আপনার ওয়ালেট সম্পর্কে জানতে পারবে না।

বিটকয়েন একাউন্ট

আমি উপরে অলরেডি বলে দিয়েছি বিটকয়েন আদান-প্রদান করার জন্য আপনাকে ক্রিপ্টোকারেন্সি স্পট এক্সচেঞ্জ এর মাধ্যমে বা  ব্যক্তিগত ওয়ালেট এর মাধ্যমে আদান-প্রদান করতে হবে। ব্যক্তিগত ওয়ালেট বলতে যেমন Trust wallet.

সুতরাং আপনি যদি বিটকয়েন কিনতে চান তাহলে বাইনান্স থেকে বিটকয়েন ক্রয় করতে পারেন।  এবং বিক্রি করতে চাইলেও সেখান থেকে সহজেই বিক্রি করতে পারবেন। Binance ছাড়াও Coinbase Exchange, FTX, Kraken, KuCoin  ইত্যাদি ক্রিপ্টোকারেন্সি স্পট এক্সচেঞ্জ এর মাধ্যমে  ক্রয় বিক্রয় করতে পারেন।

বিটকয়েন থেকে বিকাশ

আপনি চাইলে বিট কয়েন থেকে সহজে বিকাশে টাকা আনতে পারবেন।  বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রিপ্টোকারেন্সি স্পট এক্সচেঞ্জ  কোম্পানি হচ্ছে Binance.  সুতরাং আপনার যদি একটি Binance  আইডি কার্ড ভেরিফাই একাউন্ট থাকে, তাহলে আপনি বাইনান্স থেকে বিটকয়েন থেকে বিকাশে খুব সহজে টাকা তুলতে পারবেন।

অথবা আপনি যদি বিকাশ রকেট বা নগদ মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে বিটকয়েন কিনবেন!  তাহলে Binance সাইটের P2P সার্ভিসের মাধ্যমে খুব সহজেই মুহূর্তের মধ্যেই বিটকয়েন কিনতে পারবেন।  আপনি চাইলে বাইনান্স P2P সার্ভিসের মাধ্যমে মুহূর্তের মধ্যেই বিট কয়েন বিক্রি ও করতে পারবেন।

উপসংহার

আমি আপনাদের বিট কয়েন সম্পর্কে ডিটেইলস আলোচনা করার চেষ্টা করেছি এই পোস্টে। এবং আমি আপনাদেরকে বুঝাতে চেষ্টা করেছি বিটকয়েন আসলে একটি ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং এটি একটি ডিজিটাল মুদ্রা, যার কোন অস্তিত্ব নাই।

এটার ডিজিটাল মাধ্যমে তৈরি করা হয় এবং ডিজিটাল মাধ্যমে লেনদেন করা হয়।  ক্রিপ্টোকারেন্সি বা বিটকয়েন কোন সরকার বা রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।  এবং কে কখন বিটকয়েন তৈরি করেছে এর কোনো  সঠিক ইতিহাস নেই।

আপনাদের যদি কোন বিটকয়েন বা ক্রিপ্টোকারেন্সি সম্পর্কে কোন প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে পারেন।  আমি বিটকয়েন বা ক্রিপ্টোকারেন্সি সম্পর্কে সকল প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।

ক্রিপ্টোকারেন্সি বা বিটকয়েন সম্পর্কে রেগুলার টিপস পেতে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটে সাথেই থাকুন। এবং সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য আপনাদের সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ

Leave a Comment