ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন – এনআইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম 2023

আমাদের অনেকের ভোটার আইডি কার্ডে কিছু না কিছু ভুল থেকেই থাকে। ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার জন্য আমাদের কি কি করা প্রয়োজন তা আমরা জানিনা। 

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন

যেহেতু ভোটার আইডি কার্ড  আমাদের জাতীয়তা অর্থাৎ পরিচয় বহন করে সুতরাং এটা সংশোধন করে সঠিক ইনফরমেশন তথ্য থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ভোটার আইডি কাড আমরা বিভিন্ন প্রাত্যহিক কাজে ব্যবহার করি। 

ভোটার আইডি কার্ড ব্যবহার করে আমরা যে কাজগুলো করে থাকি তা হল

  • পাসপোর্ট ইস্যু করতে পারবেন
  • বিবাহ নিবন্ধন করার সময় লাগে
  • ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু 
  • জমি রেজিষ্ট্রেশন করতে লাগে
  • ঠিকাদারী লাইসেন্স প্রাপ্তি 
  • বাড়ির নক্সা অনুমোদন প্রাপ্তি 
  • গাড়ির রেজিষ্ট্রেশন প্রাপ্তি 
  • ব্যাংক হিসাব খোলা সময়
  • সরকারী, বেসরকারী বা স্বায়ত্বশাসিত সংস্থায় চাকরির জন্য

এছাড়াও আমাদের অনেক কাজে ভোটার আইডি কার্ড প্রয়োজন হয় সুতরাং ভোটার আইডি কার্ডের ভুল থাকলে এনআইডি কার্ড সংশোধন করা অপরিহার্য

 যাদের ভোটার আইডি কার্ডে বিভিন্ন ভুল রয়েছে যেমন নামে বলব এসে বলে অথবা বাবা আমার নামের ভুল ইত্যাদি ভুল গুলোর জন্য আপনার যা করা উচিত তা আজকে আমি বিস্তারে পাগল দেখা করব

তাই আপনি যদি ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন  করতে চান তাহলে অবশ্যই এই আর্টিকেলটি সহকারে পড়ুন তো চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করি

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম:-

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার জন্য পদ্ধতি রয়েছে অনলাইন এবং অফলাইন আপনি যদি অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে চান তাহলে আমি সমস্ত প্রসেস দেখিয়ে দিব এছাড়াও বলে দিব ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার জন্য আপনার কি কি প্রয়োজন

 সরাসরি ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন:

আপনার সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফরম – ২ সংগ্রহ করে পূরণ করতে হবে। এনআইডি কার্ড সংশোধন ফি রকেট/বিকাশ এর মাধ্যমে জমা দিয়ে তার রশিদ এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ফরমের পিছেনে পিন-আপ করে সংশ্লিষ্ট  উপজেলায় জমা দিন তারপর আপনার ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন সংশোধনের কার্যক্রম শুরু হয়। 

অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন

অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন  করার জন্য সর্বপ্রথম আপনাকে আবেদন দাখিল  করতে হবে। এনআইডি কার্ড সংশোধন  করার জন্য বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট services.nidw.gov.bd ঠিকানায় গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে  লগইন করুন। লগইন করার পর  আপনার ভোটারের ছবি, নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, জন্ম তারিখসহ যাবতীয় তথ্য দেখা যায় এবং এগুলো এডিট করার মাধ্যমে আবেদন দাখিল করা যায়। 

আপনি চাইলে ঘরে বসে নিজেই নিজের মোবাইল বা কম্পিউটার ব্যবহার করে এনআইডি কার্ড/ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন এর আবেদন দাখিল করতে পারবেন। এক্ষেত্রে অফিসে যাওয়া আসার কষ্ট করার প্রয়োজন হয় না এবং সময়ও বেচে যায়। 

বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে ঘরে বসে অনলাইনে এনআইডি কার্ড/ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন এর আবেদন করাই ভালো। আপনি যদি অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে না পারেন তাহলে নিচের ভিডিওটি দেখে নিতে পারেন

এনআইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি লাগে?

যদি আপনার ভোটার আইডি কার্ড নামের বানানে ভুল হয়ে থাকে আপনি যদি এই আইডি কার্ডের বানান নামের বানান ঠিক করতে চান, তাহলে আপনার যা যা প্রয়োজন তা হলো:

  • জন্ম নিবন্ধন সনদ:
  • এসএসসি সনদ:

জন্ম নিবন্ধন সনদ: আবেদনকারীর অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদের কপি আবেদনের সাথে জমা দিতে হবে। অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ জমা দেওয়া সবার জন্য বাধ্যতামূলক। জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কপি না থাকলে, নিচের আর্টিকেলটি দেখে নিতে পারেন:

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন সনদ ডাউনলোড ও আবেদন করার নিয়ম 2022

এসএসসি সনদ: আবেদনকারীর এসএসসি/সমমান সার্টিফিকেট,এডমিট কার্ড  অথবা রেজিষ্ট্রেশন কার্ড ফটোকপি আবেদনের সাথে জমা দিতে হবে। অথবা অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন এর আবেদন করার সময় ছবি তুলে বা স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে।

যদি আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ না থাকে, যদি বিবাহিত হন এবং তাহলে আবেদনের সাথে নিম্নোক্ত কাগজপত্রগুলো জমা দিতে পারেন:

  • অনলাইন জন্ম নিবন্ধন ফটোকপি (বাধ্যতামূলক)।
  • কাবিননামা/ বৈবাহিক সনদ (যদি থাকে)।
  • স্বামী/স্ত্রীর ভোটার আইডি কার্ডের কপি (যদি থাকে)। 
  • সন্তানদের শিক্ষা সনদ অথবা জন্ম নিবন্ধন সনদ (যদি থাকে)।
  • পৌর মেয়র/চেয়ারম্যান/ওয়ার্ড কাউন্সিলরের প্রত্যয়নপত্র ইত্যাদি

আপনি যদি বিবাহিত না হন, তাহলে যেসব কাগজপত্রে নাম সঠিক করে লেখা আছে। সে সব কাগজপত্র আবেদনের সাথে জমা দেবেন।

যদি  ভোটার আইডি কার্ড নামের পদবী সংশোধন করতে চান তাহলে-

  • এসএসসি সনদ (যদি থাকে)।
  • অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ (বাধ্যতামূলক)।
  • স্বামী/স্ত্রীর এনআইডি কার্ডের কপি (যদি থাকে)।
  • কাবিননামা/বৈবাহিক সনদ (যদি থাকে)।
  • শিক্ষা সনদ অথবা জন্ম নিবন্ধন সনদ (যদি থাকে)।
  • পাসপোর্টের কপি (যদি থাকে)।
  • ড্রাইভিং লাইসেন্স এর কপি (যদি থাকে)।
  •  পৌর মেয়র/চেয়ারম্যান/ওয়ার্ড কাউন্সিলরের প্রত্যয়নপত্র ইত্যাদি 

উপরোক্ত কাগজপত্রের মধ্যে যে কাগজপত্রগুলো আছে, সেগুলো জমা দেবেন।

যদি আপনার সম্পূর্ণ নাম পরিবর্তন করতে চান,  সেক্ষেত্রে উপরিউল্লেখিত কাগজগুলোএকটি এ্যাফিডেভিট/হলফনামা জমা দিতে হবে। হলফনামা অবশ্যই জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে সম্পাদিত হতে হবে।

সম্পূর্ণ নাম অথবা অন্য কোনো পরিবর্তন করার সময় অবশ্যই তদন্ত করার প্রয়োজন পড়ে। উপজেলা নির্বাচন অফিসার  নিজে সাথে থেকে তদন্ত করবেন এবং রিপোর্ট তৈরী করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট করবেন। 

সুতরাং বড় কোনো পরিবর্তন করার সময় অবশ্যই সঠিক কারণ এবং নির্ভুল তথ্য দিয়ে আবেদন ফরম পূরণ করবেন। অবশ্যই কোন জালিয়াতির জন্য পরিবর্তন করবেন না জালিয়াতির জন্য আইডি কার্ড সংশোধন করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন FAQs

এনআইডি কার্ড সংশোধন করার সময় আমাদের অনেকের অনেক প্রশ্ন থাকে আমাদের সবার মনে  যে প্রশ্ন রয়েছে সেগুলোর উত্তর নিচে দেখে নিন:

সংশোধন করতে কত সময় লাগে ?

এনআইডি কার্ড সংশোধন করতে 7 থেকে সর্বোচ্চ 30 দিন পর্যন্ত পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। যদি আপনার আইডি কার্ডের সাধারণ কিছু পরিবর্তন করার প্রয়োজন পড়ে, তাহলে 7 দিনের মধ্যেই হয়ে যাবে। আর যদি অনেক বেশি পরিবর্তন করার প্রয়োজন পড়ে তাহলে সর্বোচ্চ 30 দিন সময় পর্যন্ত লাগতে পারে।

ভোটার আইডি কার্ডে মায়ের নাম সংশোধন ?

ভোটার আইডি কার্ডের মায়ের নাম পরিবর্তন করার জন্য অবশ্যই উপরের নিয়ম গুলো ফলো করে আবেদন করতে হবে।  তারপর আবেদন ফি জমা দিয়ে অপেক্ষা করুন।

আইডি কার্ড এর ইংরেজি নাম পরিবর্তন

অনেকের আইডি কার্ডে ইংরেজি নামে ভুল থাকে এই পরিবর্তন করার জন্য অবশ্যই আপনার সার্টিফিকেট (যদি থাকে) এবং অন্য যা প্রয়োজন তা নিয়ে আবেদন করুন।

শেষ কথা:

উপরোক্ত পরামর্শটি ফলো করে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে পারবেন।  আপনার যদি কোন প্রশ্ন ওঠেনা পরামর্শ থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আপনাদের প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেয়ার চেষ্টা করবো। 

রেগুলার এরকম অনলাইনে বিষয়ে টিপস এবং ট্রিকস পেতে অবশ্যই আমার ওয়েবসাইট এর সাথেই থাকবেন। আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। 

Leave a Comment